2C 1508ZG_JAL_POULTRY_FARM_R2 ইঁদুর-জ্বরে হাহাকার, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত দ্বিগুণ! লেপ্টোস্পাইরা রোগে আক্রান্ত ১৫০জনের বেশি। হঠাত্‍ সংক্রমণ বৃদ্ধি চিন্তায় প্রশাসন। ৯১টি রক্তের নমুনার মধ্যে ৭১টি পজিটিভ! অভিযোগ স্থানীয় পোলট্রি ফার্ম থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সচেতনতা প্রচার স্বাস্থ্যকর্মীদের। পোলট্রি এলাকায় স্যানিটাইজেশনের কাজও শুরু। লেপ্টোস্পাইরা একটি ব্যাকটেরিয়াল রোগ ইঁদুর বা অন্যান্য প্রাণীর মূত্র থেকে ছড়ায় বন্যা বা জলাবদ্ধ এলাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। সঠিক সময়ে চিকিত্‍সা না হলে কিডনির ক্ষতি। লিভারের সমস্যা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আক্রান্ত এলাকায় স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে মেডিকেল ক্যাম্প বসানো হয়েছে। রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি ঔষধ বিতরনের কাজ শুরু হয়েছে। অপরদিকে পেয়েছি তরফ থেকে সমস্ত বাড়িতে জলের কল বিশুদ্ধকরণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে PHE তরফে। আজও অসুস্থ হয়ে একজন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছে। রাজগঞ্জের BMOH এলাকা পরিদর্শন করছেন। এদিকে, চেকরমারি গ্রাম সহ আসে পাশে বেশ কয়েকটি গ্রামে বাড়ি বাড়িতে মানুষের অসুস্থতার খবর মিলছে। বর্তমানে সরম সমস্যায় বাসিন্দারা সমস্যার কথা বলতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে কেঁদে ফেলছেন। তবে এই ঘটনা মোকাবেলায় জেলা ও ব্লক প্রশাসন এবং স্বাস্থ দপ্তর সর্বতভাবে চেষা চালিয়ে জাচছে। হেপাটাইটিস ও ল্যাপ্টোস্পাইরা এই জোড়া ফলায় বিদ্ধ রাজগঞ্জের সন্ন্যাসী কাটা গ্রামপঞ্চায়েতের চেকরভিটা গ্রাম। ইতিমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়েছে।মৃত্যু হয়েছে ১ জনের বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন সন্যাসীকাটা গ্রামপঞ্চায়েতের চেরক মারি গ্রামে রয়েছে একটি মুরগীর হ্যাচারি। সেখান থেকে সম্প্রতি মাছির উপদ্রব ছড়ায় গ্রামে। এবং সেখান থেকেই এই রোগ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা।রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে জন্ডিসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি বহু রোগী। তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার শুক্রবার বিকেল নাগাদ টেলিফোনে জানান, এই গ্রামগুলোতে হেপাটাইটিস ও ল্যাপ্টোস্পাইরা বেশ কিছু রোগের উপসর্গ নিয়ে বহু মানুষ আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। আমরা মেডিকেল ক্যাম্প বসিয়েছি।তবে জলের থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে পাশাপাশি গবাদি পশু বিভিন্ন কারণে এই রোগগুলো ছড়ায় বলে তিনি জানান। জেলাশাসক শ্যামা পারভীন জানান, পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের (PCB ) পারমিশন ছাড়াই এই হ্যাচারি চলছিল। পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশমতোই আপাতত এই সিদ্ধান্ত। পোল্ট্রি ফার্ম আপাতত বন্দের নির্দেশ দিলেন জলপাইগুড়ি জেলাশাসক শামা পারভিন। প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ওই ফার্ম আগামী ৭ দিনের মধ্যে বন্দ করে দিতে হবে।বৃহস্পতিবার জেলাশাকের দপ্তরে ম্যারাথন বৈঠকের পর ফার্ম কর্তৃপক্ষ কে ওই নির্দেশ দেন জেলাশাসক।বৈঠকে বিভিন্ন দপ্তরের সাথে উপস্থিত ছিলেন ফার্ম কর্তৃপক্ষ। জেলাশাকের নির্দেশে হতাশ ফার্ম কর্তৃপক্ষ। এদিকে, পোল্ট্রি ফার্ম বন্দের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ। শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ দেখালো ফার্মের কর্মীরা। তাদের দাবী তারাও ওই গ্রামের বাসিন্দা। ওই ফার্মে কাজ করে।কিন্তু তারা কেউ আক্রান্ত হয়নি। ফার্ম বন্দ হলে কাজ হারাবেন তারা।পেট চালানো মুশকিল হবে তাদের। এদিকে ডাক্তার প্রীতম বোস (বিএমওএইচ) জানান, সদর ব্লক থেকেও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশ মতন এখান থেকেও চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী রাজগঞ্জের এই আক্রান্ত গ্রামে পরিষেবার জন্য পাঠানো হয়েছে। জেলাশাকের এই নির্দেশে হতাশ ফার্ম কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যরা। জানা গেছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল ওই ফার্ম। বর্তমানে‌ প্রায় আড়াই লক্ষ মুরগি‌ রয়েছে ওই ফার্মে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় এক লক্ষ ডিম উৎপাদন করা হয় সেখানে। জেলাশাসক শ্যামা পারভীন জানান, পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের (PCB ) পারমিশন ছাড়াই এই হ্যাচারি চলছিল। পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশমতোই আপাতত এই সিদ্ধান্ত। আপাতত সাত দিন সময় বেঁধে দিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । সরকারি সমস্ত নিয়ম মেনে কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা করলে পরবর্তীতে চিন্তাভাবনা করা যাবে।উল্লেখ্য, ওই হ্যাচারি ‌থেকে দূষণের জেরে হেপাটাইটিস সহ বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দেয় পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে। সংক্রমণের‌ জেরে ইতিমধ্যেই একজন মহিলার মৃত্যু ঘটেছে বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও হ্যাচারির সঙ্গে গ্রামের রোগ বৃদ্ধি কোন‌ও সম্পর্ক বলে দাবি করেন ফার্ম কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যরা। প্রশাসনের এই কঠোর সিদ্ধান্তের পর প্রায় আড়াই লক্ষ মুরগি সাত দিনের মধ্যে কোথায় সরানো হবে তা‌ নিয়ে দিশেহারা ফার্ম কর্তৃপক্ষ। রিপোর্ট:- প্রদ্যুৎ দাস, ক্যামেরা:- ঋষি চক্রবর্তী, ( জলপাইগুড়ি )